তবে কি দেরিতে হলেও রাজনীতির ময়দানে পা রাখছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়৷ লক্ষ্মীবারে ‘দাদা’র বেহালার বাড়িতে ‘দিদি’র আগমনের পর থেকে এই জল্পনা শুরু হয়েছে৷ এবার সেই জল্পনাকে সুনামী পর্যায়ে পৌঁছে দিলেন স্বয়ং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷
‘‘আমরা জানি রাজনীতির বাইরে নেতা-নেত্রীরা এক পা’ও হাঁটেন না’’ জানিয়ে দিলীপের দাবি, ‘‘ মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা জানাতে যাওয়ার পিছনে আসল উদ্দেশ্য অন্য৷’’ এরপরই বোমা ফাটিয়েছেন, ‘‘সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যদি রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ হন, তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই!’’ আপনি এতটা নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে? ‘গরুর দুধ থেকে সোনা পাওয়ার’ দাবি করে অতীতে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছিলেন৷ এহেন দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘আগেই তো বললাম, রাজনীতির বাইরে নেতা-নেত্রীরা এক পা’ও কোথাও রাখতে পারেন না!’’
স্বাভাবিকভাবেই, দিলীপ-বয়ান নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র জল্পনা৷ তবে কি তাঁর কাছে কোনও ইঙ্গিত পৌঁছেছে? তা না হলে এমন দাবি কেন করছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি? ওই মহলের মতে: দিলীপবাবুর দাবি একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়৷ কারণ, ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও যেমন ধান ভাঙে তেমনই রাজনীতির কারবারিরাও সর্বত্রই যে রাজনীতির রসদ খোঁজেন তা বলাইবাহুল্য৷ লক্ষ্মীবারে দাদার জন্মদিনে তাঁর বেহালার বাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ জল্পনার সেই আগুনেই এদিন ধুনো দিয়েছেন দিলীপ৷
তৃণমূল সূত্রের খবর, দীনেশ ত্রিবেদী এবং মানস ভুঁইয়া ইস্তফা দেওয়ার ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যসভার দুটি পদ খালি রয়েছে৷ তার একটি আসন থেকে মুকুল রায়ের দাঁড়ানোর সম্ভবনা চূড়ান্ত৷ অন্য আসনটিতে কাকে মনোনীত করা হবে তা এখনও ঠিক হয়নি৷ স্বভাবতই, রাজ্যসভার অন্য আসনটির জন্য সৌরভ রাজি হলে তৃণমূলের তরফে যে কোনও আপত্তি থাকবে না তা ওই সূত্রের দাবি৷
যদিও বেহালার গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার সূত্রের খবর, ‘দাদা’র এখনই রাজনীতি যোগ দেওয়ার কোনও সম্ভবনা নেই৷ কারণ, তিনি আপাতত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও ‘দাদাগিরি’ নিয়ে ব্যস্ত আছেন৷ রয়েছে নিজস্ব কোচিং স্কুলও৷ যদিও জল্পনার পারদ থেমে নেই৷ কারণ, জল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ব্যক্তির নামটা যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়৷ ঘনিষ্ঠজনেরাও বলছেন, ‘‘সেই লর্ডসের মাঠ থেকে শুরু৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জল্পনা আর বিতর্ক যে নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে দাদার!’’
ফলে, কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, ক্রিকেটের ‘মহারাজ’ শেষ পর্যন্ত সত্যি দিদির থুড়ি রাজনীতির ব্যাটন হাতে তুলে নেন কি না, তার সদুত্তর জানা যাবে সময়েই৷